আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজ আপনাদের মাঝে অরেকটি আর্টিকেল নিয়ে হাজির হলাম। আজ আপনাদের জানাবো হাত পা অবশ হয়ে যাওয়া যেসব মারাত্মক রোগের লক্ষণ। অনেকেরই হাত বা পায়ে অবশ হয়ে যাওয়ার সমস্যা(Problem) হয়ে থাকে। তবে এই বিষয়টি বেশিরভাগ মানুষই গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন মনে করেন না। আর এতেই হয় বিপদ(Danger)। কারণ হাত-পা অবশ(limbs are numb) হয়ে যাওয়া কোনো সাধারণ লক্ষণ নয়, এই সমস্যা অনেক কঠিন রোগের ইঙ্গিত দেয়।
মূলত বাহু বা কবজির কোনো একটি স্নায়ু বা একগুচ্ছ স্নায়ু যদি সংকুচিত হয় এবং ক্ষতিগ্রস্থ(Damaged) হয় তাহলে হাত অবশ হয়ে যাওয়ার অনুভূতি হয়। এছাড়াও ডায়াবেটিসের(Diabetes) মত রোগের কারণে পেরিফেরাল স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্থ হলে, আঘাতের ফলে, সংক্রমণ(Infection) এবং বিষাক্ত পদার্থের সংস্পর্শের কারণেও হাত অবশ হওয়ার অনুভূতি হতে পারে।
অপর দিকে পায়ের পাতা অবশ হওয়ার ক্ষেত্রে জ্বলুনিসহ সুঁই দিয়ে খোঁচানোর মত অনুভূতি হয়। মেরুদন্ডের নিচের অংশের স্নায়ুমূলে যন্ত্রণা(Pain) হলে এমন হতে পারে। এ ধরনের অনুভূতিগুলো বিক্ষিপ্তভাবে বা সরাসরি হয় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কম সময় স্থায়ী হয়।
যদি হাতের উপর ভর দিয়ে দীর্ঘক্ষণ ঘুমিয়ে থাকেন, পায়ের উপর পা তুলে বসে থাকেন অথবা নড়াচড়া(Movement) না করে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকেন তাহলে অবশ হওয়ার অনুভূতি হয়। তবে যদি বারবার এমন অনুভূতি হয় তাহলে দ্রুতই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। কারণ জটিল কোনো স্বাস্থ্য(Health) সমস্যার কারণেও এমনটি হতে পারে। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক সেই কারণগুলো সম্পর্কে-
ডায়াবেটিস
অনেক মানুষই ডায়াবেটিসে(Diabetes) ভুগে থাকেন। পেরিফেরাল স্নায়ু রোগের এটি একটি সাধারণ কারণ। এর ফলে পায়ের পাতা অবশ হওয়ার লক্ষণ দেখা যায়, যা আস্তে আস্তে উপরে ওঠে।
সিস্টেমিক ডিজিজ
এই রোগে শুধু শরীরের একটি অঙ্গই আক্রান্ত হয়না। কিডনি(Kidney) রোগ, ভাস্কুলার ডিজিজ, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা এবং ক্যান্সার(Cancer) সৃষ্টিকারী টিউমার যা স্নায়ুর উপর চাপ সৃষ্টি করে ইত্যাদি রোগগুলো সিস্টেমিক ডিজিজের অন্তর্ভুক্ত। এই রোগগুলোর ক্ষেত্রে অবশ হয়ে যাওয়ার অনুভূতির সম্পর্ক বিদ্যমান।
মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস
প্রাথমিক অবস্থায় অবশ হয়ে যাওয়ার অনুভূতি হালকা থাকলেও ঘন ঘন এমন হলে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। সঙ্গে চিকিৎসককে দেখানো উচিত। কাররসাম্যের উপর প্রভাব পড়ে, মাথা ঘুরায় এবং ক্লান্তি(Fatigue) ভর করে।
পেরিফেরাল আরটারি ডিজিজ
এই রোগে মস্তিষ্ক, বাহু ও দেহের বিভিন্ন অঙ্গে যে ধমনী রক্ত(Blood) সরবরাহ করে নিয়ে যায় তাতে প্লাকের সৃষ্টি হয়। ফ্যাট, ক্যালসিয়াম(Calcium), ফাইবারাস টিস্যু এবং কোলেস্টেরলের কারণে প্লাক গঠিত হয়। চিকিৎসা করা না হলে প্লাক জমে শক্ত হয়ে যায় এবং ধমনীর পথকে সরু করে দেয়। এর ফলে পায়ের উপর প্রভাব পরে এবং ওই অংশে সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।
টারসাল টানেল সিনড্রোম
পায়ের পাতার পেছনের অংশে গোড়ালির ভেতরের দিকে এই টানেল থাকে। টারসাল টানেল সিনড্রোমটি পোস্টেরিওর টিবিয়াল নিউরালজিয়া নামেও পরিচিত। গোড়ালির ভেতরের দিকের টিবিয়াল স্নায়ুর(Nerves) সংকোচনের ফলে হয় এমন। চিকিৎসা করা না হলে গোড়ালির অসাড়তা আস্তে আস্তে ছড়িয়ে যেতে থাকে এবং স্নায়ুর স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে।
কারপাল টানেল সিনড্রোম
কবজির মিডিয়ান স্নায়ুতে চাপ পড়ার ফলে কারপাল টানেল সিনড্রোম হতে দেখা যায়। এই মিডিয়ান স্নায়ুটি হাতের তালু এবং প্রথম তিনটি আঙ্গুলের অনুভুতি এবং নড়াচড়ায়(Movement) সাহায্য করে।