সকালে ঘুম থেকে উঠার পর, দুপুরে খাবার খাওয়ার পর বা রাতে ঘুমানোর আগ মুহূর্তে দুধ খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে অনেকের। আট থেকে আশি, প্রায় সব বয়সের মানুষকেই শরীরের হাল ফেরাতে নিয়মিত দুধ খাওয়ার কথা বলা হয়। আবার বাড়ির প্রাপ্ত বয়স্করা ছোটদের দুধ খাওয়ার কথা বলে থাকেন।
পুষ্টিকর খাবার দুধ খাওয়ার কথা বলা হলেও এ নিয়ে আবার বিতর্ক রয়েছে অনেকের মধ্যে। কারও মতে, দুধের পুষ্টি উপাদান পাওয়ার জন্য গরম দুধ খাওয়া উচিত। আবার কেউ দাবি করেন, গরম নয়, ঠান্ডা দুধে উপকার বেশি। এ নিয়ে নানা মতামত রয়েছে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে পুষ্টিবিদরা কী বলছেন, সেটি জানা গুরুত্বপূর্ণ। এ ব্যাপারে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন কলকাতা শহরের বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ ঈশানী গঙ্গোপাধ্যায়। বিষয়টি নিয়ে এবার তাহলে জেনে নেয়া যাক।
পুষ্টির ভাণ্ডার: দুধ হচ্ছে প্রোটিনের ভাণ্ডার। যা সহজেই গ্রহণ করে নেয় শরীর। এ জন্য বলা যেতে পারে নিয়মিত দুধ পান করলে শরীরে ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্টের চাহিদা পূরণ হয়। আবার ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি২, ভিটামিন এ, ভিটামিন ই, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও ভিটামিন উপাদান রয়েছে দুধে। শরীর-স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য নিয়মিত এক গ্লাস করে দুধ পান করতেই পারেন।
ঠান্ডা না গরম দুধ, কোনটি ভালো: এ ব্যাপারে পুষ্টিবিদ ঈশানী জানিয়েছেন, ঠান্ডা ও গরম দুধ উভয়ই শরীরের জন্য উপকারী। এ জন্য যেকোনো সুস্থ মানুষ চাইলে গরম বা ঠান্ডা দুধ যেকোনোটি পান করতে পারবেন। এতে সমস্যা নেই। তবে কিছু ক্ষেত্রে গরম দুধের তুলনায় ঠান্ডা দুধ পানের পরামর্শ দেয়া হয়। সেসব নিচে আলোচনা করা হলো-
পেটের সমস্য: অনেকেরই দুধ পানের পর গ্যাস-অ্যাসিডিটির মতো সমষ্যা হয়। এতে বেশ ভুগতে হয়। কিন্তু তারা যদি ঠান্ডা দুধ পান করেন, তাহলে এই সমস্যার সম্ভাবনা থাকে না। আবার ঠান্ডা দুধ পানে মজুত ক্যালসিয়ামও সহজেই গ্রহণ করে নেয় শরীর। এ কারণেই ঠান্ডা দুধ খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।
কী পরিমাণ গ্রহণ করা উচিত: একজন সুস্থ মানুষ দিনে ২৫০ এমএল পরিমাণ দুধ পান করতে পারেন। এতে প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি পূরণ হবে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। পাশাপাশি দই, ছানা, পনিরের মতো দুগ্ধজাত খাবারও খেতে হবে নিয়ম করে। তাতে ছোট ছোট বিভিন্ন রোগ দূরে থাকবে।
যেকোনো সময় কি দুধ পান করা যাবে: সকাল, বিকেল বা রাত, যেকোনো সময় দুধ পান করা হয়। তবে যারা অনিদ্রার সমস্যায় রয়েছেন, তারা ঘুমানোর আগে দুধ পান করতে পারেন। রাতে দুধ পানে শরীরে মেলাটোনিনের ক্ষরণ বাড়ে। এতে চোখে ভালো ঘুম আসে। এ জন্য রাতে ভালো ঘুমের জন্য খাবার খাওয়ার কিছুক্ষণ পর দুধ পান করে শুয়ে পড়তে পারেন। তাতে ভালো উপকার পাবেন।