আমাদের দেশে মন্দির, বাড়ির ঠাকুর ঘরে অথবা বিভিন্ন পুজা পার্বণে, কর্পূর(Camphor) ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে আপনি হয়তো জানেন না, ত্বক(Skin) ও চুলের ক্ষেত্রেও কর্পূরের ব্যবহার হয়ে থাকে। কর্পূর ত্বকে খুব সহজেই শোষিত হয় এবং ঠাণ্ডা অনুভূতি প্রদান করে। এটি ত্বকের চুলকানি ও জ্বালাভাব দূর করে, চুলের গোড়া শক্ত করে, চুলের বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। কর্পূরে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট(Antioxidant), অ্যান্টি-ফাংগাল বৈশিষ্ট্য বর্তমান। এককথায় কর্পূর বহুগুণ সম্পন্ন। তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক, কর্পূর ত্বক ও চুলের কী কী উপকার করে। ত্বকের জন্য কর্পূর।
ত্বকের চুলকানি ও জ্বালাভাব কমাতে সাহায্য করে: কর্পূরে অ্যান্টি-ফাংগাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল(Antibacterial) বৈশিষ্ট্যগুলো বর্তমান, যা ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা, যেমন-চুলকানি এবং জ্বালা ভাব দূর করে। গবেষণায় দেখা গেছে, এটি ক্ষত নিরাময়েও বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
নখের ইনফেকশন ও ফাটা গোড়ালি থেকে মুক্তি দেয় পায়ের নখের ফাঙ্গাল ইনফেকশন হলে খুব ব্যথা(Pain) করে, তবে কর্পূর পেস্ট লাগালে স্বস্তি মিলতে পারে। এর অ্যান্টি-ফাংগাল এবং অ্যান্টিসেপটিক(Antiseptic) বৈশিষ্ট্যগুলো ইনফেকশন সারিয়ে তুলতে খুব ভালো কাজ করে। এছাড়াও, এর মধ্যে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য থাকার কারণে ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন থেকেও মুক্তি দেয়। কর্পূর মিশ্রিত পানিতে কিছুক্ষণ পা ভিজিয়ে রাখুন এবং স্ক্রাব(Scrub) করুন। এতে ফাটা গোড়ালি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
ত্বকের ব়্যাশ কমায় কর্পূরে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্যা থাকার কারণে এটি ত্বকের ব়্যাশ থেকে মুক্তি দিতে পারে। কর্পূর(Camphor) মিশ্রিত পানি নিয়ে ত্বকের ব়্যাশের ওপর লাগান, রেজাল্ট মিলবে হাতেনাতে!
চুলের জন্য কর্পূর:
চুলের গোড়া শক্ত করে কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, কর্পূর চুলের গোড়া শক্ত করতে সক্ষম। কর্পূরের তেলের সাথে ডিম(Egg) বা দই মিশিয়ে চুলে লাগালে, এটি চুলকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি(Nutrition) সরবরাহ করতে পারে।
চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল(Olive oil) এর সাথে কর্পূর তেল মিশিয়ে ব্যবহার করুন, এটি চুলের বৃদ্ধিতে বিশেষভাবে সহায়ক। এটি রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে তোলে এবং চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
উকুনের সমস্যা দূর করে কর্পূর একটি দুর্দান্ত জীবানুনাশক। এটি উকুনের সমস্যা দূর করতে খুবই কার্যকর। গোসলের কর্পূর তেল মিশিয়ে গোসল করুন অথবা নারকেল তেলের সাথে কর্পূর তেল(Camphor oil) মিশিয়ে সেই তেল মাথার ত্বকে লাগান, দেখবেন উকুনের সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পাবেন।
কর্পূর ব্যবহারের ঝুঁকি এবং সাবধানতা:
⇒ কর্পূর থেকে বিষক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যার প্রাথমিক লক্ষণগুলো হল খিঁচুনি, পেশী সংকোচন, স্নায়ুর ওপর প্রভাব, বিভ্রান্তি হওয়া, ইত্যাদি।
⇒ যাদের লিভারের সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে কোনোভাবে কর্পূর(Camphor) ব্যবহার করা চলবে না।
⇒ যাদের হাঁপানির সমস্যা আছে তাদের ক্ষেত্রেও এর ব্যবহার না করাই ভালো।
⇒ কর্পূরকে ছোটদের হাতের নাগাল থেকে দূরে রাখুন। এটি বাচ্চাদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর(Harmful) হতে পারে।
সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান। আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন। পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।